পাল্টে যাচ্ছে আঁকাআঁকির ধারণা: মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল

পাল্টে যাচ্ছে আঁকাআঁকির ধারণা

পাল্টে যাচ্ছে আঁকাআঁকির ধারণা

অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য একমাত্র সার্বজনীন ভাষা চিত্রশিল্প। প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হচ্ছে আঁকাআঁকির ধারণাতেও। রঙ, তুলি, পেন্সিল কিংবা আর্ট পেপারের জায়গায় ডিজাইনারদের হাতে ক্রমেই জায়গা করে নিচ্ছে গ্রাফিক্স ট্যাবলেট। প্রফেশনাল ডিজাইনার, ফ্রিল্যান্সার, আর্কিটেকচার, ক্যারেক্টার ডিজাইনার, ফটোগ্রাফার, কার্টুনিস্ট এবং থ্রিডি আর্টিস্টদের হাতে গ্রাফিক্স ট্যাবলেট সহজলভ্য করতে দেশের বাজারে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে মাল্টিমিডিয়া কিংডম। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পার করছে। দেশের ডিজিটাল আঁকাআঁকির বর্তমান পরিস্থিতি এবং গ্রাফিক্স ট্যাবলেট নিয়ে যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল।

যুগান্তর: সম্প্রতি আপনার প্রতিষ্ঠান মাল্টিমিডিয়া কিংডম প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পার করলো। কেমন ছিল যাত্রাটা?

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল: খুব যে মসৃণ ছিল তা বলবো না। অনেক চড়াই-উৎরাই পার করেই আজকের মাল্টিমিডিয়া কিংডম। তবে হ্যাঁ, শুরু থেকেই আমাদের মূলমন্ত্র ছিল গ্রাহকের আস্থা অর্জন করা। এ পর্যায়ে এসে মনে হয়, এক্ষেত্রে অনেকাংশেই আমরা সফল হয়েছি। খুব ছোট পর্যায় থেকে শুরু করেছিলাম। শুরু থেকেই ব্র্যান্ড নির্ধারণের ক্ষেত্রে আমরা সতর্ক ছিলাম। প্রতিটি পণ্যের মান ভালোভাবে যাচাই করে আমরা সরবরাহ করেছি। ধীরে ধীরে মাল্টিমিডিয়া কিংডমকে একটি ব্র্যান্ডে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি।

যুগান্তর: আপনার প্রতিষ্ঠান কী ধরনের পণ্য সরবরাহ করে?

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল: আমরা আমাদের ট্যাগলাইনে বলে থাকি ‘তথ্য-প্রযুক্তি পণ্য বিপণন ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান’। মূলত শুরুটা ছিল মাল্টিমিডিয়া পণ্য নিয়েই। সাউন্ড সিস্টেম, কম্পিউটার হার্ডওয়্যারসহ বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি পণ্য সরবরাহ করতাম। এরপর যুক্ত হয়েছে আঁকাআঁকির ডিজিটাল ডিভাইস গ্রাফিক্স ট্যাবলেট। প্রায় এক দশক ধরে পণ্যটি আমরা সরবরাহ করে আসছি। বলতে পারেন দেশের বাজারে গ্রাফিক্স ট্যাবলেট সরবরাহে মাল্টিমিডিয়া কিংডম পাইওনেয়ার।

যুগান্তর: দেশের বাজারে প্রায় এক দশক ধরে আঁকাআঁকির ডিজিটাল ডিভাইস সরবরাহ করছেন। ধারণাটা এলো কীভাবে?

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল: আমি বরাবরই গানপাগল মানুষ। ছোটবেলায় বাবার গলায় গান শুনেই আগ্রহটা জন্মেছিল। মাল্টিমিডিয়া পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করার পরে মনে হয়েছে, আমি মনের মতো কিছু করতে পারছি। এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর ব্যবসায়িক কাজে দেশের বাইরে যাওয়া আসা শুরু। বিভিন্ন দেশে যাওয়ার পর আমার ঝোঁক ছিল সবসময় সেই দেশে ব্যবহৃত নিত্যনতুন প্রযুক্তি পণ্যের দিকেই। সবসময় ভাবতাম কোন পণ্যটা দেশের বাজারে সরবরাহ করলে দেশের মানুষ উপকৃত হবে এবং বিশেষায়িত পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাল্টিমিডিয়া কিংডমকে পরিচিত করা। এরই ধারাবাহিকতায় পরিচয় গ্রাফিক্স ট্যাবলেটের সঙ্গে। একসময় রঙ-তুলির মতো কম্পিউটার-ল্যাপটপেও আঁকা যাবে সেটা তখনো কল্পনায় ছিল না। এমনকি মোবাইল ফোনেও নিখুঁত আঁকাআঁকি করা যাবে তাতো ছিল আরও কল্পনাতীত। গ্রাফিক্স ট্যাবলেট দেখে প্রথমে আমি কিছুটা চমৎকৃত হয়েছিলাম। ডিভাইসটি আমাকে এতটাই আকর্ষিত করেছিল যে, নিজেই সেটা নিয়ে গবেষণা শুরু করলাম।

পাল্টে যাচ্ছে আঁকাআঁকির ধারণা: মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল
রম্য পত্রিকা উন্মাদের সম্পাদক আহসান হাবীবের সঙ্গে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল

যুগান্তর: কী ধরনের গবেষণা করলেন? বিস্তারিত বলবেন?

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল: গ্রাফিক্স ট্যাবলেট সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিতে চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর ফ্যাক্টরি, শোরুম ভিজিট করেছি। সেখানকার ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলেছি। জানার চেষ্টা করেছি পণ্যটির ভবিষ্যৎ বাজার পরিকল্পনা সম্পর্কে। তাদের কথা থেকে এটা নিশ্চিত হয়েছি যে, পণ্যটি একসময় আর্টিস্টদের জন্য পরিপূর্ণ একটি ডিভাইসে পরিণত হবে। সনাতনী আঁকাআঁকির মাধ্যমগুলোর বিকল্প না হলেও সহজলভ্যতা এবং সুবিধার দিক দিয়ে এগিয়ে থাকবে অনেকটাই। সব দিক বিবেচনা করে দেশের আঁকিয়েদের হাতে চমৎকার এই ডিভাইসটি তুলে দেয়ার ভাবনা থেকে মাল্টিমিডিয়া পণ্যের পাশাপাশি গ্রাফিক্স ট্যাবলেট সরবরাহ শুরু করলাম। এখন একথা বলতে আনন্দ অনুভব করি যে দীর্ঘ প্রায় এক দশক ধরে দেশের হাজারো আর্টিস্টের হাতে পণ্যটি তুলে দিতে পেরেছি। এরই মধ্যে পরিচয় হয়েছে দেশের স্বনামধন্য আঁকিয়ে সৈয়দ রাশাদ ইমাম তন্ময়, মোরশেদ মিশু, মেহেদী হক, আসিফুর রহমান, আয়ান, অসীম রয়, সাজ্জাদ হোসাইন, জুনায়েদ আজিম চৌধুরী এমনকি বাংলাদেশে কার্টুন শিল্পের পথিকৃৎ আহসান হাবীব স্যারের সঙ্গে। তারা দীর্ঘদিন ধরে ডিজিটাল মাধ্যমে আঁকাআঁকি করছেন। অনেকেই দেশের স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিক, বিজ্ঞাপনী সংস্থায় যুক্ত। তাদের সংস্পর্শে এসে ডিজিটাল আঁকাআঁকি সম্পর্কে প্রতিনিয়তই হৃদ্য হচ্ছি।

যুগান্তর: যে পণ্যটি নিয়ে কথা হচ্ছে সেটা সম্পর্কেই পাঠককে একটু ধারণা দেয়া যাক। আপনার কাছে গ্রাফিক্স ট্যাবলেট আসলে কী? এটা দিয়ে কী ধরনের কাজ করা যায়?

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল: ছোট করে বলতে গেলে এটা একটা মাউসের রিপ্লেস। আপনি হয়তো কখনো মোবাইলে আঁকা যায় এমন অ্যাপে কিংবা কম্পিউটারে পেইন্ট বা অন্য কোন সফটওয়্যারে মাউস দিয়ে আঁকিবুঁকি করে থাকবেন। সেটা খুব বেশি সূক্ষ্ম হয় না। তবে এই ডিভাইসটির সাহায্যে আঁকা যায় খুব নিখুঁতভাবে, খুব সহজে। প্রশ্ন জাগতে পারে, মোবাইল অ্যাপ আর গ্রাফিক্স ট্যাবলেটের মধ্যে পার্থক্যটা আসলে কোথায়? পার্থক্য অনেক; প্রথমত সার্ফেস। একটা ট্যাবে আপনি খুব সহজভাবে আঁকাআঁকি করতে পারবেন। আরও একটা ব্যাপার হল পেন প্রেশার। আপনি যদি কখনো রঙ-তুলিতে আঁকাআঁকি করে থাকেন তাহলে জেনে থাকবেন; তুলিতে চাপ দিলে অঙ্কনের শেপ পরিবর্তন হয়ে যায়। অর্থাৎ একই তুলি দিয়ে মোটা-চিকন উভয় রকম রেখা আঁকা যায়। এই কাজটাও গ্রাফিক্স ট্যাবলেটের সাহায্যে করা যায়। আর যেহেতু ইচ্ছে মতো রঙ নিয়ে এঁকে আবার মুছে ফেলা যায়, আবার যেখানে সেখানে আঁকাআঁকিও করা যায় তাই ক্রমেই তরুণ আর্টিস্টদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে গ্রাফিক্স ট্যাবলেট। আপনি যদি ছবি আঁকতে চান এবং সহজেই আপনার আঁকা এই ছবিগুলো ভার্চুয়াল বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে চান, তাহলে গ্রাফিক্স ট্যাবলেট অনন্য একটি ডিভাইস। ল্যাপটপ-ডেস্কটপ, এমনকি স্মার্টফোনের সঙ্গে জুড়ে রঙ-তুলি ছাড়াই আঁকতে পারেন ডিজিটাল গ্রাফিক্স ট্যাবলেটের সাহায্যে। এছাড়াও ইলাস্ট্রেশন, ফটোরিটাচ কিংবা ডিজিটাল সিগনেচারের জন্যও গ্রাফিক্স ট্যাবলেট অনন্য।

পাল্টে যাচ্ছে আঁকাআঁকির ধারণা: মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল
জনপ্রিয় আর্টিস্ট মোরশেদ মিশু (বামে) ও সৈয়দ রাশাদ ইমাম তন্ময়ের সঙ্গে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল

যুগান্তর: গ্রাফিক্স ট্যাবলেট পণ্যটি আসলে কাদের জন্য? অর্থাৎ এই ডিভাইসটি কারা কিনবেন, কেন কিনবেন?

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল: বর্তমান গতির এই জীবনে সবসময় রঙ-তুলিতে আঁকা হয়ে ওঠে না। আবার অনেক সময় বদ্ধ ঘরে আঁকতে আঁকতে আঁকিয়ের এক ঘেঁয়েমি চলে আসতে পারে। সেখান থেকে মুক্তি দিতে পারে গ্রাফিক্স ট্যাবলেট। কোথাও ঘুরতে গিয়ে হোক, আর চলার পথে হোক; যেখানে খুশি আপনি আঁকাআঁকি করতে পারেন ডিভাইসটির সাহায্যে। গ্রাফিক্স ট্যাবলেট আসলে চক-স্লেটের মতো। যতবার খুশি লেখা মিশিয়ে লেখা যায়। সেরকম ডিজিটাল গ্রাফিক্স ট্যাবলেটে যতবার খুশি এঁকে আনডু করা যায়, কালার পরিবর্তন করা যায়, শেপ পাল্টানো যায়। এই ডিভাইসটি সব ধরনের আঁকিয়েদের জন্যই। যারা শখের বশে কিংবা প্রফেশনালি আঁকাআঁকি করেন কিংবা শুরু করবেন ভাবছেন তাদের জন্য এই গ্রাফিক্স ট্যাবলেট। থ্রিডি আর্ট, এনিমেশন, কার্টুন, ক্যারেক্টার ডিজাইন, আর্কিটেক্ট ডিজাইন, ফটো রিটাচসহ যে কোন ধরনের ইলাস্ট্রেশনের কাজের জন্য গ্রাফিক্স ট্যাবলেট অনন্য একটি ডিভাইস।

যুগান্তর: গ্রাফিক্স ট্যাবলেট কেনার আগে কী কী দেখা উচিৎ?

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল: গ্রাফিক্স ট্যাবলেট কেনার আগে যে কয়টি বিষয় জানা উচিৎ তার মধ্যে অন্যতম হল একটিভ এরিয়া (অঙ্কন এলাকা)। কারণ আপনি কী কাজ করবেন সেটার ধরন অনুযায়ী আপনাকে গ্রাফিক্স ট্যাবলেট নির্বাচন করতে হবে। গ্রাফিক্স ট্যাবলেটটি ডিসপ্লে (এলসিডি) ছাড়া নাকি ডিসপ্লেসহ সেটাও জানা জরুরি। যারা ছবি আঁকায় ডিটেইলিং পছন্দ করেন তাদের জন্য পেন প্রেশার সেনসিটিভিটি বিষয়টিও ভীষণ জরুরি। গ্রাফিক্স ট্যাবলেটে কলম সদৃশ যে অংশটি দিয়ে আঁকা হয়ে অর্থাৎ ডিজিটাল তুলি হিসেবে যেটা ব্যবহার করা হয়; তাকে স্টাইলাস বা পেন বলা হয়। সাধারণত এগুলো দু’ধরনের হয়ে থাকে। ব্যাটারি ফ্রি এবং রিচার্জেবল। কেনার আগে এ বিষয়টাও খেয়াল করা দরকার। গ্রাফিক্স ট্যাবলেটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ‘এক্সপ্রেস কী’, সহজভাবে বললে এক্সপ্রেস কী হল শর্টকাট কমান্ডের কী। আঁকাআঁকির সময় যে কাজগুলো আপনি বেশি করে থাকেন যেমন কাট, কপি, পেস্ট, রিডো, আন্ডু এসবের জন্য বারবার মাউস দিয়ে কমান্ড দেয়া কিংবা ম্যানুয়ালি কাজ করা বিরক্তিকর। এজন্য একটি গ্রাফিক্স ট্যাবলেটে কয়েকটি এক্সপ্রেস কী আছে তাও জরুরি।

যুগান্তর: বাজারে ভালো মানের গ্রাফিক্স ট্যাবলেটের ব্র্যান্ড কোনটি?

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল: বাজারে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়াকম গ্রাফিক্স ট্যাবলেট। অনেকেই গ্রাফিক্স ট্যাবলেট বলতে ওয়াকমই বোঝেন। তবে মাল্টিমিডিয়া কিংডম এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বখ্যাত প্রায় সব ব্র্যান্ডের ব্র্যান্ডের গ্রাফিক্স ট্যাবলেট নিয়ে কাজ করেছে। বর্তমানে বাজারে ওয়াকমের পাশাপাশি এক্সপি পেন, হুইয়ন, পার্বলো, ভেইক প্রভৃতি ব্র্যান্ডের গ্রাফিক্স ট্যাবলেটগুলো বেশ জনপ্রিয়। তবে ফিচারের দিক থেকে ওয়াকমের চেয়ে অন্য ব্র্যান্ডগুলো এগিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে ভেইক ও পার্বলো খুব বেশি পুরনো ব্র্যান্ড না। তারা খুব অল্প বাজেটে ভালো ফিচার সমৃদ্ধ গ্রাফিক্স ট্যাবলেট বাজারে আনছে। মাল্টিমিডিয়া কিংডম বেশিরভাগ ব্র্যান্ডের অথরাইজড ডিস্ট্রিবিউটর। আমরা প্রত্যেকটি ব্র্যান্ডের গ্রাফিক্স ট্যাবলেটই অফিশিয়াল ওয়ারেন্টিসহ বাজারজাত করে থাকি।

পাল্টে যাচ্ছে আঁকাআঁকির ধারণা: মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল
আর্টিস্ট অসীম রয়ের সঙ্গে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল

যুগান্তর: তরুণ আঁকিয়েদের জন্য আপনি কী ধরনের পরামর্শ দিতে চান?

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল: তরুণদের উদ্দেশে বলতে চাই, যে প্লাটফর্মেই আঁকুন না কেন প্র্যাকটিসের বিকল্প নেই। দেশের কার্টুন, এনিমেশন, ইলাস্ট্রেশনের চাহিদা ব্যাপকহারে বাড়ছে। যারা কাজ শুরু করেছেন কিংবা শুরু করতে চান; শিগগিরই শুরু করে দিন। আর ডিজিটাল প্লাটফর্মে কাজ শুরু করতে চাইলে সংগ্রহ করে ফেলুন একটি গ্রাফিক্স ট্যাবলেট। আরেকটি কথা উল্লেখ করতে চাই, মাল্টিমিডিয়া কিংডমের দেখানো পথে দেশের বাজারে ইদানীং অনেকেই ডিজিটাল এই ডিভাইসটি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। তবে এখানে একটি কথা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, অনেকেই পণ্যটি সম্পর্কে না জেনেই আমদানি করে ফেলছেন। ফলে দেশের আঁকিয়েদের হাতে ভুল পণ্যও চলে আসছে। আপনি আপনার শিশু সন্তানকে একটি গ্রাফিক্স ট্যাবলেট কিনে দিতে চান। তার বয়স এবং কাজের পরিধি অনুযায়ী গ্রাফিক্স ট্যাবলেট প্রয়োজন একরকম, আবার প্রফেশনাল একজনের জন্য প্রয়োজন আরেকরকম। এসব না বুঝেই শুধুমাত্র ব্যবসায়িক মনোভাব থেকে বিশেষায়িত পণ্যটিকে অন্য সাধারণ পণ্যের মতো বাজারজাত করছেন। এক্ষেত্রে গ্রাহকের প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যায় না। এক্ষেত্রে আমি বলবো আপনি জ্বর হলেই যেমন মুখস্থ প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খান, কিন্তু অন্য কোন জটিল রোগের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ মতোই ওষুধ খেতে হয়। গ্রাফিক্স ট্যাবলেটটিও একটি বিশেষায়িত পণ্য। এটি অন্য সাধারণ পণ্যের মতো না কিনে অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নিয়ে কিনুন। প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেন। আমাদের ফেসবুক পেজে কিংবা ওয়েবসাইটে লাইভ চ্যাটে গ্রাফিক্স ট্যাবলেট সম্পর্কে যে কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন।

যুগান্তর: আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল: আপনাকে এবং যুগান্তরকেও অনেক ধন্যবাদ।

যুগান্তরে ৮ জুলাই ২০১৯ প্রকাশিত সাক্ষাৎকারের লিংক: পাল্টে যাচ্ছে আঁকাআঁকির ধারণা: মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জুয়েল

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are makes.